নিউজ ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বরাবরের মতো অতিরিক্ত যাত্রী সামাল দিতে বাড়তি প্রস্তুতি নিয়েছে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও লঞ্চ মালিক সমিতি।
কর্তৃপক্ষের সিডিউল অনুসারে লঞ্চের ডেকের যাত্রীদের জন্য অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৫ আগস্ট, আর স্পেশাল লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে ১৯ আগস্ট থেকে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় নৌযান সংস্থা বিআইডব্লিউটিসির বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে আগামী ১৬ আগস্ট।
তবে শিডিউল ঠিক না হওয়ায় কেবিনের আগ্রিম টিকিট বিক্রি নিয়ে জটিলতা থাকলেও এরই মধ্যে লঞ্চের ব্যক্তিগত কেবিন বুকিং দিতে গিয়ে অনেক যাত্রী হতাশ হয়ে ফিরে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযোগ বুকিং শুরুর আগেই কেবিন পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ লঞ্চের অফিস বলছে টিকিট শেষ কিংবা অনলাইনে চেষ্টা করতে।
এ বিষয়ে ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) আলমগীর কবির বলেন, আসলে ঈদ মৌসুমে টিকিট পেতে একটু সমস্যা হবেই। সিডিউল চূড়ান্ত না হওয়ায় অফিসিয়ালি টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি। এখন যা বিক্রি হচ্ছে তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে। এর সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র কোনো সংযোগ নেই।
অন্যদিকে ঈদ যাত্রাকে গতিশীল ও বাধাহীন করতে ১৮ আগস্ট রাত থেকে সব ধরনের বালুবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হবে বলেও বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানিয়েছে, ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিতে নতুন টার্মিনাল ভবনের লঞ্চের কাউন্টারগুলো থেকে ডেকের যাত্রীদের টিকিট বিক্রি শুরু করা হবে।
এ ছাড়া যাতে করে পন্টুনে অতিরিক্ত যাত্রী যেতে না পারে এজন্য টার্মিনালগুলোতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোজার ঈদের মতোই সাত দিন আগে থেকেই ডেকের যাত্রীদের জন্য টিকিট বিক্রি চালু করার জন্য মালিকদের বলা হয়েছে। তবে সমস্যা হলো কোন লঞ্চে কতো যাত্রী নেওয়া হবে তার সঠিক কোনো হিসাব নেই।
অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপ সামাল দেওয়া প্রসঙ্গে আলমগীর কবির বলেন, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত লঞ্চ রাখা হবে। স্পেশাল সার্ভিস চালু হবে। ঈদে ফিটনেসবিহীন কোনো লঞ্চ চলাচলের সুযোগ নেই।
তবে ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিতে কোনো কোনো অসাধু লঞ্চ মালিক চলাচলের অনুপোযোগী বেশ কিছু লঞ্চ সংস্কার করছেন বলে অভিযোগ থেকেই যায়। কেরানীগঞ্জের তেলঘাট থেকে মীরেরবাগ পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ডকইয়ার্ড রয়েছে। এর অধিকাংশ ডকইয়ার্ডেই চলছে যাত্রীবাহী লঞ্চের মেরামত কাজ। প্রতিটি ডকইয়ার্ডেই বিভিন্ন নৌযান তৈরি, সংস্কার ও রঙের কাজ চলছে। এর মধ্যে অধিকাংশ ডকইয়ার্ডেই চলছে পুরোনো লঞ্চে রং ও মেরামতের কাজ।
লঞ্চে ভাড়ার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, আসন ব্যবস্থাপনা অনুসারে ছোট-বড় লঞ্চসমূহে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আকারের লঞ্চগুলোতে ডুপ্লেক্স ও ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৩০০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকা হয়ে থাকে। যেখানে দুটো বেড, এসি, রেফ্রিজারেটর, টিভি, ডাইনিং সুবিধা রয়েছে।
দুই বেড সুবিধায় ডাবল কেবিনের ভাড়া ১ হাজার ৮০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা, এক বেডের সুবিধায় সিঙ্গেল কেবিন ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, সোফা-কাম-বেডের ক্ষেত্রে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়ে থাকে। এখানেও এসি কিংবা ফ্যান ও টিভির সুবিধা রয়েছে।
এ ছাড়া লঞ্চের ডেকেও (লঞ্চের খোলা স্থান) যাত্রা করা যায়। বড় অনেক লঞ্চে কার্পেট দেওয়া রয়েছে। তবে চাদর বালিশ যাত্রীকে সঙ্গে বহন করতে হয়। এখানে ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।